Tuesday, December 29, 2020

হ্যামিলনের বাশীওয়ালা, ২০২০

হ্যামিলনের বাশিওয়ালার কথা মনে আছে? বাঁশির শব্দ শুনে একে একে ঘর থেকে সব ইঁদুর বের হয়ে এসেছিল, তার পিছে পিছে মন্ত্রমুগ্ধের মত মিছিল করে এগিয়ে গিয়েছিল মৃত্যু যাত্রায়। পরবর্তীতে একইভাবে সে ঐ শহরের সব বাচ্চাদেরকেও নিয়ে গিয়েছিল মন্ত্রমুগ্ধ করে। সে বাচ্চারাও আর ফিরেনি।

করোনা, বা কোভিদ ১৯ যেন এক হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। সারা বছর জুড়ে শুনলাম শুধু মানুষের মৃত্য আর অসুস্থতার সংবাদ।

আমি খিলগাঁও সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে পড়েছি ক্লাস ফাইভ থেকে
এসএসসি পর্যন্ত। স্কুল জীবনের বন্ধু মেহেদী গতকাল রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গিয়েছে। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন।
মেহেদী খুব হাসিখুশী ছেলে ছিল। সব সময় ওর মুখে এক টুকরো হাসি ঝুলে থাকতো।

আমাদের এস এস সি পরীক্ষার সিট পড়েছিল বাড্ডা আলাতুন্নেসা স্কুলে। পরীক্ষা দিতে দিতে মাঝে মাঝে পিঠ ঘুরিয়ে পেছনের সিটে তাকালেই দেখতাম গভীর মনোযোগে লিখে যাচ্ছে ও। কিন্তু মুখের সেই এক চিলতে কৌতুকপূর্ণ হাসিটা কখনো মুছে যেত না। হ্যা, মেহেদী আমার পেছনে বসেই পরীক্ষা দিয়েছিল। স্কুলে ওর রোল নাম্বার ছিল ৭, আমাদের এসএসসির সিটগুলোও ক্লাস টেনের রোল নম্বর অনুসারেই সাজানো হয়েছিল।

পরীক্ষার পর সেও আমার মতই নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কিছুদিন পরে শুনি মেহেদীর আব্বা মারা গিয়েছে। এরপর শুনি ও কলেজ ছেড়ে দিয়েছে। এরপর বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন রকম গুজব আর ছোট খাট সংবাদ শুনেছি মেহেদীর ব্যাপারে। তারপর বহু বছর ওর আর কোন খোজ পাইনি।

২০১৫ সালে, ফেসবুকের মাধ্যমে আবার যোগাযোগ হল। কিন্তু কথা হোত না কখনোই। এমনকি ওর ফেসবুক প্রোফাইলেও যাওয়া হয়নি কখনো তেমন একটা। আজ তার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে প্রোফাইলে গেলাম ছেলেবেলার বন্ধুটিকে খুঁজে পাওয়ার আশায়, এবং পেয়েও গেলাম পুরনো কিছু ছবিতে।

প্রোফাইল জুড়ে তার ফুটফুটে দু'টি শিশুর ছবি। কি যে একটা কষ্ট বুকের মাঝে আটকে যাচ্ছে, কতটাই না কষ্টে আছে ওর পরিবার, আমি হয়তো তার ১ ভাগও বুঝতে পারছি না।

ওর সাথে মেসেঞ্জারে শেষ কথোপকথন হচ্ছে ওর ফোন নাম্বার নেয়া। তবে আমি সে নাম্বারে কল দেইনি। কল না দিয়ে আমি লিখেছি "এখন অনেক রাত হয়ে গিয়েছে, আগামীকাল ফোন দিব"।

সেই আগামীকাল আর আসেনি। ফোন নম্বর ইনবক্সেই থেকে গিয়েছে। কখনোই আর সে নাম্বারে কল করা হবে না।

আমাদের কারও হাতে আসলে কোন সময় নেই। সময় যে নেই, সে কথাটাও আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না। এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার।

আমার শশুড় (যাকে আমরা আদর করে বাপু ডাকতাম) মারা গেলেন ৭ দিন আগে, ২২ তারিখে। উনাকে নোয়াখালীতে, উনার পৈত্রিক নিবাসে কবর দিয়ে আসলাম তিন দিন আগে।

ঢাকায় ফেরার পর থেকে আমি নিজেও অসুস্থতার কবলে পড়েছি। মন দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। চোখের পানিতে জড়ানো এই লেখাটির তার বড় প্রমাণ।

বাপুর মৃত্যুর ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত। উনার সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল ১৯ ডিসেম্বর, শনিবার। সারাদিন উনি উনার দুই বেয়াই এর সাথে খেলা দেখলেন, সবাইকে মাতিয়ে রাখলেন স্বভাবসুলভ হাসি ঠাট্টায়। এরপর এক সময় নিজের রুমে চলে গেলেন বিশ্রাম নেয়ার জন্য।
উনি ঘুমাচ্ছেন ভেবে উনার কাছ থেকে বিদায় না নিয়েই বাসা থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলাম।

হঠাত কি মনে করে আবার উনার রুমে ফিরে গেলাম। গিয়ে দেখি উনি বসে আছেন, তখনো ঘুমাননি।

বিদায় নিলাম।

উনি হাসিমুখে আমাকে বিদায় দিলেন, আর বললেন "তোমাকে দেখলে খুব ভাল লাগে। আবার এসো।"

তখনও যদি জানতাম যে আর দেখা হবে না, তাহলে সেদিন আর বাসায় ফিরতাম না।

এই একই অভিশপ্ত সপ্তাহের মাঝে শুনলাম বন্ধু মুবিরের বাবার মৃত্যুসংবাদ। ও হোয়াটসেপে প্রথমে দোয়ার জন্য বল্লো; আংকেলকে আইসিউতে নিয়ে যাচ্ছে, সে সংবাদ দিল। এর অল্প কিছুক্ষণ পরেই উনার মৃত্যুসংবাদ দিল। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, আংকেলসহ ওর পরিবারের অনেকেই করোনা আক্রান্ত, কিন্তু ও নিজে দেশের বাইরে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন দান করুক।

আমীন।

Monday, December 28, 2020

Review of অমানুষ by Humayun Ahmed

অমানুষঅমানুষ by Humayun Ahmed
My rating: 5 of 5 stars

আজকে অনেকদিন পর আবার শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর এই বইটি পড়লাম। আমি মূল বই "ম্যান অন ফায়ার" পড়িনি, কিংবা সিনেমাটিও দেখিনি, তবে এইটুকু বলতে পারি যে এটি আমার পড়া অন্যতম সেরা একটি বই। গত ২০ বছরে কত অসংখ্যবার যে বইটি পড়েছি (আর সাথে কাজীদার অগ্নিমানব), তার কোন ইয়ত্তা নেই।

ইতালীয় পটভূমিকায় লেখা এই গল্পটিতে একজন অসম সাহসী বাংলাদেশী মানুষ জামশেদকে দেখি আমরা শক্তিশালী মাফিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে একক লড়াই এ নামতে। মাত্র ৯৫ পাতার এই বইটিতে রয়েছে বেশ কিছু মনে রাখার মত চরিত্র, কিন্তু গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে ৫৫ বছর বয়সী সাবেক ভাড়াটে সৈন্য জামশেদ এবং ১২ বছর বয়সী নিঃসঙ্গ তরুণী এনি। এই স্বল্প পরিসরেই আমরা দেখতে পাই দু'জনের চরিত্রের অসাধারণ কিছু দিক।

সাথে এনির বাবা মা, তার চাচা, একজন সৎ পুলিশ অফিসার এবং কিছু মাফিয়া সদস্যদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি গল্পটিতে এমন এক ধরণের গতি এনে দেয়, যে একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যায় না।

হুমায়ুন আহমেদের সেরা ১০টি উপন্যাসের মধ্যে আমি অবশ্যই এটিকে রাখবো, কারণ এধরণের গল্প তিনি আর লেখেননি বললেই চলে। ইংরেজীতে যেটাকে বলে "স্বস্তির জায়গা" বা কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে এসে তিনি এই গল্পটি লিখেছিলেন।

আমি জানি আমি বইটি আরো অনেকবার পড়বো। যারা এখনো পড়েননি, অবশ্যই পড়তে ভুলবেন না।

View all my reviews

Sunday, December 20, 2020

 If I Can Make it Here, I Can Make it Anywhere

- ইশতিয়াক খান





আজ নতুন করে শুরু করবো সব কিছু।

ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রা বলেছিলেন যদি "যদি নিউইয়র্কে কিছু হতে পার, দুনিয়ার যেকোন জায়গায় হতে পারবে"

গুনগুন করে ক্লাসিক গান টার সুর ভাঁজতে ভাঁজতে এগিয়ে গেলাম জানালার দিকে।আজকের সূর্য্যটা অন্যদিনের চেয়ে বেশি উজ্জ্বল মনে হচ্ছে। মোবাইলের এপ এ দেখলাম তাপমাত্রা ২৫-৩০ ডিগ্রীর মধ্যে থাকবে।

কাঠ ফাটা রোদের মধ্যে বের হলাম হাফ প্যান্ট, হাওয়াই শার্ট আর ফেডোরা হ্যাট চাপিয়ে। খুবই বিচিত্র পোষাক, নিঃসন্দেহে। কিন্তু মন আজ ফুরফুরা আর পকেট, ডলারে ভর্তি।

কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। বাদ সাধলেন সুয্যি মামা। ডিউটির মাঝে ফাঁকি মেরেছেন উনি। উনার নির্দয় অনুপস্থিতিতে বেরসিক মেঘ এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেল সর্বাঙ্গ, মূহুর্তের মধ্যেই।

এতই বিরক্ত হলাম যে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে মেঘের দিকে তর্জনী উচা করে কিছুক্ষণ সূর্য্য কে অভিসম্পাত করলাম। এর পর হঠাত আনমনা হয়ে গেলাম।

ওয়াও নিউ ইয়র্ক! কে জানতো এত দ্রুত আমার ভাগ্য ফিরবে। ছোট একটা ব্যবসায় কিছু টাকা লগ্নী করেছিলাম। এক মাসের মাথায় সে টাকা ১০ গুণ হয়ে ফিরে এল। পরের মাসে ইনভেস্টমেন্ট দ্বিগুণ করে দিলাম। আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। "ডার্টি নিগার"রা ড্রাগ খেয়ে খেয়ে, নিজেরা মারামারি করে মরুক, আমার কি?

প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগতো। লিটন ছিল আমার প্রিয় বন্ধু, নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করতো আমাকে। এমন কি, আমি যেদিন "হেলথ চেক আপ" এর জন্য "মালয়েশিয়া" যাওয়ার কথা বলে প্লেনে উঠে গেলাম, সেদিনও কিছু সন্দেহ করে নাই সে। ড্রপ করে দিয়ে গিয়েছে এয়ারপোর্টে তার জীর্ণ টয়োটা স্টারলেট গাড়ীতে চড়িয়ে। বাবা মা কে কোনদিন চেনার সুযোগ হয়নি, আত্নীয়, বন্ধু, বেস্ট ফ্রেন্ড--সব কিছুই ছিল লিটন।

নিউ ইয়র্কে এসে মেরে দেয়া ৮০ লাখ টাকা ওড়াতে খুব বেশি সময় লাগেনি । একবারও মনে পড়েনি লিটনের কথা। ৭ দিনের লাস ভেগাস ট্রিপ প্রায় নিঃশেষিত করে দিল আমাকে, সব দিক দিয়ে।

এরপরই বাকি টাকা দিয়ে ড্রাগ ব্যবসায় নামলাম। নিগ্রোদের প্রিয় কোকেইনের ব্যবসা, পুরাটাই লাভ। লিটনের শেয়ার বাজারের উদ্ভট ব্যবসার চেয়ে অনেক ভাল।

আচ্ছা, লিটন কেমন আছে? ও কি ভেবেছে, যখন জানতে পেরেছে প্রিয় বন্ধু তার সারা জীবনের সব সঞ্চয় মেরে দিয়ে ভেগে গিয়েছে? কাউকে কি বলতে পেরেছে দুঃখের কথা? নাকি দুঃখে হার্ট এটাকই করে বসলো সে! নাহ, আর ভাবতে চাই না।

আর দেরী নয়। নতুন দিন অপেক্ষা করছে, এভাবে আর রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করার কোন মানে হয় না। এসব বাজে চিন্তাকেও মাথা থেকে দূর করে দিলাম।

সামনে আগাতে গিয়ে ধাক্কা খেলাম জোরে, আকস্মিকভাবে।

মাটিতে পড়ে আছে নিউইয়র্ক টাইমস এর একটি কপি। হাতে নিলাম পেপারটি।

বিস্ফোরিত চোখে দেখলাম, প্রথম পাতায় একজন মাঝারী আকারের মানুষের ছবি। পরনে হাফ প্যান্ট, নীল হলুদ হাওয়াই শার্ট। আর যেখানে মাথা থাকার কথা, সেখানে থেতলানো, ছিন্ন ভিন্ন মাংশপিন্ড দেখা যাচ্ছে।

পাশে আশ্চর্যজনক ভাবে পড়ে আছে একটি অক্ষত ফেডোরা হ্যাট; একদম ইন্ডিয়ানা জোন্স এর টুপিটার মত।

হঠাত মনে পড়ে গেল অনেক কিছু। আকাশের দিকে নিস্ফল তর্জনী উত্তোলন। অনেক মানুষের আর্তনাদ। কর্কশ হর্ণের শব্দ। হলুদ, চোখ ধাধানো আলো। তারপর আর কিছু মনে নেই।

এই স্বপ্নটা প্রতিদিনই দেখি আমি। মনে হয় আজকেই সেই দিন, যেদিন সব কিছু বদলে দেব। কিন্তু কিছু করতে পারি না, কাউকে কিছু বলতেও পারি না। এখানে তো আর কেউ নেই!

নিউইয়র্কে না, দুনিয়ার কোন খানেই আর কোনদিন, কোনকিছু হতে পারবো না আমি। এই বয়ামের ঢাকনাও আর খুলবে না, যেখানে আমার মস্তিষ্ক সংরক্ষিত আছে অজানা কোন এক তরলে ডুবন্ত অবস্থায়।
আমাকে ক্ষমা করে দিস লিটন।

(একটি সায়েন্স ফিকশান/ভৌতিক গল্প। বেশ কিছুদিন আগে লিখেছিলাম। শেয়ার করা হয়নি সম্ভবত)।

Thursday, December 17, 2020

বিজয় দিবসের অণুগল্প

#১৬শব্দেবিজয়
সর্বোচ্চ ১৬টি শব্দে লেখা ১০টি অণূগল্প লিখেছি, বিজয়ের মাসে। এত কম শব্দে কোন পূর্ণাঙ্গ বার্তা, জটিল কোন ভাব বা গল্প শোনানো যায় না। অন্তত আমার তাই ধারণা ছিল।

দেশ স্বাধীন হয়ে গিয়েছে। বিবস্ত্র ওরা এখনো তা টের পায়নি। বাতাসকে বুটের শব্দ ভেবে কুঁকড়ে যাচ্ছে।

ডান পাশে চার জন, বামেও চারজন। সামনে কবর খোড়া। সুনশান নিরবতা। এখন শুধু অপেক্ষা বুলেটটির জন্য।

"মা, তোমার হাতের ভাত খেতে আসবো শীঘ্রই। কয়েকটা দিন অপেক্ষা কর।"
মালিকানাবিহীন ডায়রীটির শেষ এন্ট্রি এটাই।

কিসের বিজয়? আমার দাদাকে নিয়ে গেল সেদিন চোখ বেধে, এখনো তো তার কোন খোজ পেলাম না।

চশমাটা পড়ে আছে ভাঁজ না খোলা পেপারের পাশে। ১৪ই ডিসেম্বর থেকে পেপার আর চশমাটা এভাবেই আছে।

গায়ে ক্যারোলিনের শার্ট আর হাতে দামী মার্কিন ঘড়ি। বাকিটা সাদা কংকাল। বাবাকে এভাবেই সনাক্ত করতে হল।

বাবা মা শখ করে নাম রেখেছিল মৃত্যুঞ্জয়। বয়স পাঁচ হলেও কলেমা শিখতে পারেনি সে। শকুন উড়ছে।

"বাচ্চা মানুষ, এবারের মত মাফ করে দেন।"
"সাপের বাচ্চা, বড় হয়ে সাপই হয়।"
এরপর খালি অন্ধকার।
দাদার গামছাটা খুজে পেলাম, কিন্তু দাদাকে পেলাম না। দেখলাম, সাদা গামছা কিভাবে যেন লাল হয়ে গিয়েছে।
১০
দুইদিন আগে অপহৃত স্বামীকে নিয়ে দুঃচিন্তা করা বাদ দিয়ে মা যখন ভাত দিবে, তখনই বিজয় হবে।

Monday, December 14, 2020

দাদার স্মৃতিচারণ (২০২০)


আমার দাদা শহীদ বুদ্ধিজীবী ডঃ সিরাজুল হক খান মারা গিয়েছেন আমার জন্মের ৯ বছর আগে। ছোট বেলা থেকে জেনে এসেছি আমার দাদা অনেক বড় একজন মানুষ ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতেন, এবং তিনিই ছিলেন আমাদের পরিবারের প্রথম ব্যক্তি, যিনি আমেরিকায় গিয়েছিলেন উচ্চতর ডিগ্রী লাভের উদ্দেশ্যে। উনি পরিবারের সবার জন্য রোল মডেল ছিলেন সব সময়ই। উনার একটি সাদা কালো ছবি আমার দাদুর বাসার বৈঠকখানায় ঝোলানো ছিল। সে ছবিটা দেখতাম আর ভাবতাম যে কোন একদিন হয়তো দাদার মত হতে পারবো। বুক শেলফ ভর্তি বই ছিল সুন্দর করে সাজানো। অনেক মোটা মোটা, অরিজিনাল বই। আইভানহো, ওয়ার এন্ড পিস, ডক্টর জিভাগো, কার্ল মার্ক্স এর ক্যাপিটালিস্ট--এরকম কিছু বই এর নাম মনে পড়ে। আরও ছিল অনেক গবেষণামূলক বই; ভারী ভারী ও দুর্বোধ্য বিষয়ের উপর বই। সেই শিশু বয়সেই মনে হোত, "আহা, আমারো যদি এরকম আলমারী ভর্তি বই থাকতো"। প্রতি বছর এই দিনটি আমার ও আমার পরিবারের জন্য শোকের, দুঃখের, এবং কষ্টের। গত দশকের কোন এক সময়ে আমার বড় চাচা প্রয়াত ডঃ এনামুল হক খানের দেয়া সাক্ষ্যে দাদার হত্যাকারীদের বিচার হয়। তারপর থেকে মানসিক কষ্টটা কিছু কমে এলেও, যতদিন পর্যন্ত বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পুনাকারী এবং তাদের জল্লাদদের বিচার কার্যকর করা না হয়, ততদিন পর্যন্ত এই দুঃখবোধটা কমবে না। কেউ কেউ বলেন যে এত বছর পর কেনই বা বিচার চাই? আর যাদের বিচার করা হবে বা হচ্ছে, তারা সবাই বুড়ো হয়ে গিয়েছে, কেউ কেউ ধর্মের পথে (!) আছে--তাদের বিচার চাওয়াটা নাকি "blood vendetta"। এ কথাগুলো হাস্যকর। কেন হাস্যকর, সেই ব্যাখায় যেতে চাই না। যারা বোঝার, এম্নিতেই বুঝবেন। যারা বুঝতে পারছেন না, আল্লাহ তাদেরকে হেদায়েত করুক--এই কামনা করি। এ বছরটা বিভিন্ন কারণে অন্যান্য বছরের চেয়ে ভিন্ন। এ বছরেই প্রথমবারের মত আমি ফেসবুক লাইভে এসে দাদাকে নিয়ে কিছু কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। হয়তো অনেকেই অনলাইন গ্রুপ "। সংযোগ। Connecting People" আয়োজিত অনুষ্ঠানটি দেখেছেন। যারা দেখতে পারেননি, তাদের জন্য এখানে লিংকটি দিয়ে দিচ্ছি:
https://www.facebook.com/watch/live/?v=2700817660183473&ref=watch_permalink সেখানে আমি ছাড়াও ছিলেন "ক্র্যাক প্লাটুনের" অন্যতম সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা মশগুল ভাই, নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি দিশা এবং আমার বন্ধু ডঃ ফাইয়াজ জামাল। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই আমি প্রথমবারের মত কোন পাব্লিক ফোরামে দাদাকে নিয়ে কথা বললাম। চাকরী জীবনে অনেক প্রেজেন্টেশান দিয়েছি, এবং বেশ কিছু পাব্লিক স্পিচও দিয়েছি দেশে বিদেশে, কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটাই ছিল আমার প্রথম লাইভে আসা।
Faiyaz যখন আমাকে অনুরোধ করেছিল কথা বলতে, আমি বেশ ভয়ই পেয়েছিলাম। কারণ, দাদার স্মৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে ঠিক ভাবে তুলে ধরার একটি বড় দায়িত্ব তৎক্ষণাৎ আমার কাছে চলে এসেছিল। জানি না কতটা সফল হয়েছি, কিন্তু আমার জন্য সেই তিনটি ঘন্টা ছিল খুবই আবেগের। কিছুদিন আগে দাদার পুরনো কিছু ছবি ও আমেরিকায় থাকা অবস্থায় সন্তানদের কাছে লেখা কিছু পোস্টকার্ড হাতে পেয়েছি; চাচা ফুফুদের সংগ্রহ থেকে। এখানে সংযুক্ত ছবিটি দাদার তরুণ বয়সের; তখন তিনি কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছেন। আস্তে আস্তে বাকি স্মৃতিগুলোও আমার ওয়ালে এবং দাদাকে নিয়ে বানানো পেজটি (Dr. Sirajul Haque Khan) দেব। আশা রাখি কোন একদিন দাদার একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনি গ্রন্থ প্রণয়নের কাজে হাত দিতে পারবো। সবাই আমার দাদা এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। -মোঃ ইশতিয়াক খান ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২০

Saturday, December 12, 2020

1 of the 3

1 of the 3  One of the three.
Not equal, not comparable.
And none really indispensable.
But there's one that's perceptibly essential
Sugar, spice or bitter?
Here, there and everywhere.
A good heart and silly perseverance,
A lot of rights and unlimited patience,
Hoodwink charms and an inexplicable allure.
Once there were greener pastures,
Carefree gestures and simple postures;
Crowded bazaars and pacifying torrents.
Intrusive emotions drove the cow away.
from the sweet, fragrant meadow;
Towards the pungent tangles of the purgatory.
Is it a burger shop or a kebab house?
To the cow, these are hell incarnate.
Burning skin or devastating summer, matters not.
One of the three.
Anytime you are free to flee.
But are you, really? #ishtiaq_radical

Wednesday, December 09, 2020

কোভিদ ১৯ টিকার উদ্বোধন

আজ, ৮ই ডিসেম্ববর, বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২ঃ৩১ মিনিটে মার্গারেট কিনান নামক একজন বয়স্ক ভদ্রমহিলার শরীরে ফাইজারের উদ্ভাবিত টিকাটি ইনজেকশানের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।  আগামী সপ্তাহে ৯১ বছরে পা দিতে যাওয়া "নানী" মার্গারেট এটিকে "সেরা, অগ্রীম জন্মদিনের উপহার" হিসেবে অভিহিত করেন। 





উনাকে টিকা দেয়ার মাধ্যমে আগামী কয়েক সপ্তাহ জুড়ে যুক্তরাজ্যে সংঘটিত হতে যাওয়া টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।  প্রাথমিক ভাবে আট লক্ষ মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। 


এই মাসের শেষ নাগাদ আরও চল্লিশ লাখ মানুষকে এই টিকাটি দেয়া হবে।  

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে আপাতত ৮০ বছরের বেশী বয়সী এবং কিছু স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদেরকে কোভিদের টিকা দেয়া হচ্ছে।  

যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে যে "হাজার হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে" মঙ্গলবারে। 


তা আমাদের দেশকে নিয়ে কবে এধরণের একটা খবর সবার সাথে শেয়ার করতে পারবো?


অপেক্ষায় থাকলাম। 



Sunday, December 06, 2020

My Recent Articles (Updated Till January 2021)

 





 ১। "এখন আরো বেশী কল্পকাহিনী পড়ুন"- জোসেফ স্টিগলিজ এর সাক্ষাতকার

প্রথম আলো, অনলাইন

https://www.prothomalo.com/onnoalo/article/1651163/%E2%80%98%E0%A6%8F%E0%A6%96%E0%A6%A8-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A7%9C%E0%A7%81%E0%A6%A8%E2%80%99?fbclid=IwAR17Ki4xQ1n4f3Wc6w3lqaZLCyXXxAB3Atn1cTX8ffb-grgEkjNdSXcYxgg

১৬ এপ্রিল, ২০২০


২। "সবচেয়ে বড় বিপদ ভাইরাস নিজে নয়" - ইউভাল নোয়া হারারির সাক্ষাতকার
প্রথম আলো, অনলাইন

https://www.prothomalo.com/onnoalo/article/1653917/%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A7%9C-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A6%A6-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A7%9F?fbclid=IwAR0MX2GECcWRxACKMxNQaiwv1mbRR107nTrUAbUjTCNjIufKtFcyqCSSRdQ

৩০ এপ্রিল, ২০২০

প্রথম আলো, অনলাইন


২০ মে, ২০২০

TBS Bangla, অনলাইন 



৪ জুলাই, ২০২০

TBS Bangla, অনলাইন 


৪ জুলাই, ২০২০

TBS Bangla, অনলাইন 


১০ জুলাই, ২০২০

TBS Bangla, অনলাইন 


২৫ জুলাই, ২০২০ 

TBS Bangla, অনলাইন 


TBS Bangla, অনলাইন 


TBS Bangla, অনলাইন 


১০ই অক্টোবর, ২০২০ 

TBS Bangla, অনলাইন 


১৭ই অক্টোবর, ২০২০

দৈনিক কালের কন্ঠ, অনলাইন এবং অফলাইন 

৮ই নভেম্বর, ২০২০ 



দৈনিক কালের কন্ঠ, অনলাইন এবং অফলাইন 


১৫ই নভেম্বর, ২০২০ 


দৈনিক কালের কন্ঠ, অনলাইন এবং অফলাইন 




৬ই ডিসেম্বর, ২০২০ 

দৈনিক কালের কন্ঠ, অনলাইন এবং অফলাইন 





১৩ই ডিসেম্বর, ২০২০ 

The Daily Star Bangla, অনলাইন


১৪ই ডিসেম্বর , ২০২০

২ জানুয়ারী, ২০২১