Monday, November 12, 2018

কালো দিনের কাব্য

সকালে ঘুম ভেংগে গেলো ওর; অন্য যেকোন দিনের মত। ঘুমানোর আগে সারা ঘরে এরোসল স্প্রে করে মশা তাড়িয়েছিল। তাও লক্ষ্য করলো কাঁথার এক কোণায় লালচে রঙ। অর্থাৎ যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া স্বত্তেও মশককূলের দংশনের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি ও। স্বগোক্তি করে উঠলো ও

"আরে বেটা, তুমি নিজেকে মশার হাত থেকেই রক্ষা করতে পারো না, দুনিয়ার হাত থেকে তোমাকে কে রক্ষা করবে?"।
জানালার পর্দা সরিয়ে দিল সে দু'হাতে। বাইরে তাকালো খোলা আকাশ দেখার আশায়। কিন্তু সে আশা নিমিষেই নিরাশায় পরিণত হল। কংক্রিট আর ইট পাথরের স্থাপনা ছাড়া কিছুই চোখে পড়লো না।

দাদী যখন টিনের চালের এক তলা বাড়ীটি তুলেছিলেন এখানে, তখন আশে পাশে ত্রিসিমানায় আর কোন স্থাপনা ছিল না। দিন গড়িয়ে মাস, মাস গড়িয়ে বছর গেল, আর আশে পাশে উঠে গেল বড় বড় বিল্ডিং। যুগের সাথে তাল মেলাতে টিনের চালের বাড়িও উন্নত তিন তলার কংক্রিটের স্থাপনায় রুপান্তরিত হল একসময়। কিন্তু পাশের বাড়ি বেরসিক এর মত খোলা আকাশ কে ঢেকে দিল। 

ঘরে আলো নেই বললেই চলে। কোন মতে চশমা খানা নাকের ওপর বসিয়ে ঘর থেকে বের হল সে। বারান্দা খানা খুজতে গিয়ে মনে পড়লো, মনুষ্যপ্রজাতির চাহিদার কোন অন্ত নেই। বাড়তি একখানা কাপড়ের আলমারী কে স্থান দিতে গিয়ে বারান্দার দেয়াল গুলো কিছুদিন আগেই উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এখন পুরোটাই "রুম"।

তবে জানালা রয়েছে। জানালা তো জেলখানাতেও থাকে, অফিসের ডেস্কের পাশেও কদাচ খুঁজে পাওয়া যায় কপাল ভালো থাকলে। শুধু মাত্র ভয়ানক খারাপ অপরাধীদের কে বন্দী করে রাখা কয়েদখানায় জানালা থাকে না।

বাইরে ঘোর অন্ধকার। মনে হচ্ছে যেন সন্ধ্যে বেলা। শো শো করে বাতাস বইছে।ঘড়ির কাটার রেডিয়াম আলো জানান দিল যে দুপুর বারোটা বাজে!

হায়, ভোর বেলায় ওঠার কথা ছিল আজ। সে জায়গায় এত বেলা হয়ে গিয়েছে, আর সাথে আকাশের এই অবস্থা। হঠাত এক দমকা হাওয়া ধাক্কা দিয়ে ওকে ঠেলে দিল পেছন দিকে।

"এমন দিনে কি কেউ বাসা থেকে বের হয়?"। কালো আকাশ, জোরালো বাতাস--যেকোন মূহুর্তে নামবে ঝড় আর বৃষ্টি। ভাবতে ভাবতেই শুরু হয়ে গেল বহুল প্রত্যাশিত বৃষ্টি। বছরের প্রথম, মৌসুমের প্রথম, কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো বেহেশতী ঝড়নাধারা।

মনে হচ্ছে কেউ চাবুক দিয়ে পেটাচ্ছে মাটিতে। প্রতিটি আঘাতের সাথে সাথে নেমে আসছে বড় বড় বৃষ্টির ফোটা। পিঠের নগ্ন চামড়ায় চাবুকের তীব্র কষাঘাতের মতই জোরালো শব্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন শিলা বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু প্রথম বর্ষার বৃষ্টির ফোটা বরফ পিন্ডের চেয়েও তেজস্বী।

এরকম দিনগুলোতে আশির দশকে শান্তিনগরের সকল শিক্ষকগণ তাদের ছাত্রদের স্বয়ংক্রিয় ছুটি দিয়ে দিতেন, কারণ বৃষ্টি কে যদিও ভুলে কেউ পরাভূত করতে পারতো, কিন্তু পুরো এলাকায় জমে থাকা বণ্যা সদৃশ জলাশয় পার হয়ে কেউ সুস্থ্য অবস্থায় গুরুদের কাছে পৌছুতে পারতো না।

এরকমই এক সন্ধ্যায় ও অসম্ভব কে সম্ভব করে গণিত স্যার এর বাসায় পৌছে গিয়েছিল, অর্ধভেজা অবস্থায়। স্যার ওকে দেখে বলেছিলেন, বাছা, তোমার অনেক সাহস আর অধ্যবসায়। এবার বীরদর্পে ফিরে যাও বাসায়। আজ আর ক্লাশ হবে না। ফেরার পথে আর রিকশা না পেয়ে পুরোটা পথ নির্বিকার চিত্তে, ভিজতে ভিজতে ফিরে গিয়েছিল ও।

ব্যাপারটা বেশ মজার ছিল। সেদিন ছিল রবিবার। সময় আনুমানিক সন্ধ্যা ছয়টা।

ঝড়ো হাওয়া আর বৃষ্টির বড় বড় ফোটার হাত থেকে বাচতে সবাই বিভিন্ন স্থাপনার নিচে অবস্থান নিয়েছে, আর যাদের উপায় নেই, তারা ছাতা মাথায়, বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। কয়েকজন কে দৌড়ুতেও দেখা যাচ্ছিল। এসব কর্মকান্ডের মাঝে একজন লম্বা মানুষ ধীরে ধীরে, গুন গুন করে এক অচেনা বিদেশী সংগীত এর সুর ভাজতে ভাজতে এগিয়ে যাচ্ছে -- এ দৃশ্য কাউকেই খুশী করতে পারছিল না। কিন্তু তাতে এ গল্পের নায়কের কোন বিকার ছিল না। সে তার লম্বা লম্বা হাতের আংগুল দিয়ে প্রতিটি ফোটাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছিল আর আবেগিত হচ্ছিল। আবগিত বলে আসলে কোন শব্দ নেই, কিন্তু পাঠক বুঝলেই যথেষ্ঠ; কখনো কখনো।

বর্তমানের রুঢ় চপেটাঘাত! বারোটা হোক আর তেরোটা, বাসা থেকে বের হতে তো হবেই। ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছে সেই সকাল থেকেই। তার সাথে আছে রেইন কোট আর ছাতা; স্যার যাতে না ভিজে, সেটা নিশ্চিত করতে আগেই বাসার একেবারে সামনে পার্ক করে রেখেছে সে গাড়ী।

স্যার মাথা থেকে বৃষ্টি, কালো মেঘ আর এ জাতীয় সকল বাজে বিষয়বস্তু দূর করে দ্রুত রেডি হয়ে গেলেন। পাঁচ মিনিট লাগলো হঠাত জেগে ওঠা মনুষ্যত্বের ভুতটাকে ভাগাতে। "সুইচ অফ" করে ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া আর টাকা পয়সার যাঁতাকলে ঢুকে গেলো সে।

ওর মতই আরেকজন ছিল এই শহরেই। সেও কালো দিন ভালোবাসতো। সেও বৃষ্টিতে ভিজতো কোন কারণ ছাড়াই। তার প্রোফাইলটা এখনো খুলে দেখে ও প্রায়ই। "remembering" লেখাটা দেখেই শুধু রিমেম্বার করে। তখন আবার মনুষ্যত্বের ভুতটা ছটফট করে ওঠে। কিন্তু দায়িত্ব, কর্তব্য, অর্থ, বিত্ত, সোশ্যাল লাইফ এর ভুতগুলোর শক্তি অনেক বেশি।

পাঁচ মিনিটেই ওরা সবাই মিলে এই বেয়াড়া ভুত কে কুংফু ক্যরাটে টাই কোয়ান্দো জুজিতসু সহকারে বিদায় করে দেয়। ও ফিরে যায় যান্ত্রিক জীবনে।

কালো দিন এক সময় কালো রাত হয়ে যায়।

Thursday, November 08, 2018

The Coconut Man

he CoCoNuT MaN

Oh do you know the coconut man
The coconut man, the coconut man?

There is a tree at a cross section. It is rumored that green coconuts are borne from that tree, which ripens in to matured ones in due course.


Sometimes coconuts fall upon unsuspecting pedestrians. So beware! Lo and behold! Hold your horses whilst crossing a coconut tree. For all good it is to you, it's better not to cross them trees at all. After all, they contain "green" coconuts, which grows on to ripe ones, and from which we can extract hair oil, and apply oil on to an already oily head.

No matter how many days, years or decades pass by, no matter how much good, bad and ugly walks by the crossroad, the legend of the coconut man lives by. He rubs his ring and gets the strength of ten coconuts, e.g. the yield is as much as 10 heavy duty coconuts thrown on to the bad man's mouth.

The coconut man is a creature who
comes out at night, and why?
He likes the air, he likes to scare
the nervous passer-by!

Among the wildest of stories that behest his presence, one is said about a zoo bare animal. I mean, an animal that lives in the zoo, bare footed and sans cloths; and pecks at any unsuspecting visitor who dares to lay a finger on to the cage that enslaves him. There's A nother War elephant in the zoo, which has been encased by walls put up by his own self years ago. He roars, moans, growls, beckons and bellows,bares his yellow teeth, but the leaning tower stays static and nothing really happens.

No matter how many wild animal roams the face of the earth, everyone hates the coconut man. Because he likes to scare the nervous passer by his mere presence.

Oh my, oh my!

Letter from A Fan

প্রিয়তমেষু,

জানো কি হয়েছে গতকাল রাতে? বিবেক এসেছিল বেড়াতে!

অনেক্ষণ কড়া নেড়েও আমাকে ঘুম থেকে ওঠাতে পারলো না। বিবেকহীন মানুষ হিসেবেই আরেকটা রাত পার করলাম।

বেদনায় নীল হয়ে রাত ঘুম কে অনেক্ষণ ঠেকিয়ে রেখেছিলাম। তারপর এক পর্যায়ে নীল বেদনার কাছে আত্নসমর্পণ করে ঘুমন্ত শহরের অংশ হয়ে গেলাম। সকালে হকারের পেপার পেপার ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম--কোন শহরে, তাতো জানোই। না, একাকী কোন ভিন্ন শহরে নয়, সেই পুরনো ঘুম ভাংগা শহরেই জেগে উঠলাম।আমার রিটায়ার্ড ফাদার এর সাথে নাস্তাও করলাম।

কষ্ট পেতে ভালবাসি, তাই ফ্রিজ থেকে আবার বের করলাম প্রায় শুন্য বোতলটি। চাঁদ মামা হেসে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে, আর আমি শুন্যতায় ডুবে যেতে যেতে উপলদ্ধি করলাম যে আমাকে তুমি কোন ভাবেই ফিরিয়ে নিবে না। তুমি এখন পুরোপুরি বোঝ যে তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়। আমার শেষ চিঠিতে ব্যাপারটা জানিয়ে দেয়াটাই কাল হয়েছে।

তুমি শুধু হাসিটার জন্যেই এসেছিলে, নীরবতা কে আস্বাদন করার কোন ইচ্ছে তোমার কখনোই ছিল না।দিশেহারা এই হৃদয় আমার শুধু কষ্টই পেল সারা জীবন। রুপালী গিটার টা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা থেকে শুরু করে ঘন্টার পর ঘন্টা দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা--আর সহ্য হয় না।

আমি পালাতে চাই তোমার কাছ থেকে আরো দূরে।

ইতি
একজন ভক্ত।