Sunday, November 19, 2017

A Sad Song not from a Swan

আমার জীবন অনেকগুলো আমূল পরিবর্তনের মদ্ধ্যে দিয়ে গিয়েছে। আজ হতে ২০ বছর আগে, ৬০ টাকা জমানো ছিল জীবনের একটি বড় উদ্দেশ্য--৬০ টাকা জমলে দুই টি সেবা প্রকাশনীর বই কিংবা একটি অডিও ক্যাসেট কিনতে পারতাম।

আমার জীবনে প্রথম কেনা ক্যাসেট টি ছিল নিলয় দাস এর সোলো এলবাম। কিন্ত একা কিনি নাই, আমি, আমার সেঝ মামা, ছোট মামা আর খালাতো ভাই --এই ৪ জনে মিলে চাঁদা তুলে কিনলাম। ক্যাসেট টি থাকতো সেঝ মামার কাছে কারণ উনি সিনিয়ার । আমরা সারাদিন বিভিন্ন বোর্ড গেম খেলতাম (দাবা, মনোপলি আর কখনো কখনো সাপ লুডূ/ক্যারাম) আর গান শুনতাম। সেঝ মামা খুব একটা অংশগ্রহণ করতেন না খেলায়, কিন্ত উনি আসে পাশেই থাকতেন যতদিন ঢাকায় ছিলেন। 

এক ক্যাসেট বাজাতে বাজাতে মোটামুটি সবগুলি গান মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল।  সম্ভবত ৩ নাম্বার ট্র্যাক টি ছিল "সাগর ডেকে বলে"। আমরা এই গান শুরু হলে খেলা থামিয়ে মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। এরপর ধিরে ধিরে আমরা নোভা, ফিডব্যাক, মাইলস, সোলস, এল আর বি, জেমস আর ওয়ারফেজে মজে গেলাম। সাথে ঝড়ের মত এল স্করপিয়ন্স, মেটালিকা, মেগাডেথ, বিটলস, রেইনবো, ডিপ পার্পল, ডায়ার স্ট্রেইটস, ড্রিম থিয়েটার, ইত্যাদি। গান শুনা ছাড়াও পড়তে থাকলাম হাজার হাজার বই, প্রকাশ্যে এবং গুপ্ত জায়গায়। তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা, মাশুক নানা, বিদেশী বাবা, লিও টলস্টয়, মার্ক টোয়েন, বিটোভেন, হাইফেন, বিগ ব্যাংগ, ঝালমুড়ি আর মুড়ির টিন --সব চলতো এক সাথে। 

তারপর আমি মহামান্য স্পিকার হয়ে গেলাম...থুড়ি, আমি তো হুমায়ুন আহমেদ কিংবা জাফর ইকবাল না। আপ্নি/তুমি/তুই/গ্রপমেট/ব্যাচমেট/ফ্ল্যাটমেট , I am sure you didn't come here to read the "biogasgraphy" of a nobody like me. 

মূলত যেটা বলতে চাইছিলাম, সেটা হইল-- জীবন দুইদিনের। আমি তুমি আসলে কেউ না। ঘাসের উপর বৃষ্টির ফোটা, বাতাসে ধুলিকণা--আজকে আছি কালকে নাই। অনুশোচণা রেখে লাভ নাই। আজকে একজনের সাথে ঝগড়া হল, সেই ঝগড়া মেটানোর সময় টাও হয়তো পাওয়া যাবে না, যেমন অনেকেই পায় নি তার ব্রাউজার হিস্ট্রি ক্লিয়ার করার সময়। Jam Dutt , I mean যমদূত যখন আসবে, কোন এক্সট্রা টাইম পাওয়া যাবে না।

তো আমি একজন introvert. সারা জীবন তাই ছিলাম, এখনো আছি। আমাদের ব্যাপারে বলা হয় যে we draw energy from solidarity and large crowds and get togethers drain us. এ কথা আমি মনে প্রাণে মানি। 

এ কারণে আমাকে কোন গেট টুগেদারে সহজে দেখা যায় না। আত্নীয় স্বজনের বাড়ী গেলে এক চিপায় বসে মোবাইল টিপতে থাকি। ভয়ে ভয়ে থাকি কখন কে আমাকে "মেনশান" করে; প্রায়ই দেখা যায় রুমে পিন পতন নিরবতা আর সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে--তখন বুঝি রিসেন্টলি আমার দিকে কেউ একটি প্রশ্ন কিংবা মন্তব্য ছুঁড়ে দিয়েছে, যা আমি শুন্তেই পাই নি। 

অনেকেই জানে আমার দাদা ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবি, এবং আমি পাকিস্তানি এবং তাদের সংগী সাথি দের সেভাবেই ভালবাসি যেভাবে একটি বেজী সাপ কে ভালবাসে। সো যখন কেউ বলে উঠে "আসলে শেখ মুজিব রাজাকার ছিল। সে ইয়াহিয়া খান এর সাথে আঁতাত করে বাংগালীর সর্বনাশ করে ফেলেছিল প্রায়। কি বল ইশতিয়াক?" , তখন কিংকর্তব্যবিমুড় হওয়া ছাড়া আর এক্টাই অপশান থাকে, সেটা হচ্ছে "মাননীয় স্পিকার, আমি ত দোচনা হয়ে গেলাম"।

এই যে! আবার বায়োগ্রাফি শুরু করেছি! কি যে হইসে আজকাল, নিজের কথা ছাড়া কিছু লিখতে পারি না। আমি যখন পরটা খেলাম ১, আমি যখন ভাত খাইতে গেলাম কিন্তু ডাল পাইলাম না ৪ -এইসব গল্প শুনাতে ইচ্ছা করে। ভুলেই যাই যে আমার বয়স এখনো ৪০ হয় নাই আর এই গ্রুপ আমার ব্যক্তিগত প্রচার চালানোর জায়গা না।

মরুভুমিতে ওয়েসিস বলে একটা জিনিশ দেখা যায়। অনেক দূর হাটার পর ছোট্ট জলাশয়। যারা মরুভুমি পাড়ি দেয়, তারাই এখানে থেমে পানি টানি খায়, রেস্ট টেস্ট নেয়, তারপর আবার যাত্রা শুরু করে। আকাশ থেকে এলিয়েন নেমে এসে পানি খেয়ে আবার ভেগে যায় না। ওয়েসিস এর সাথে থাকা নারিকেল গাছটির নাম ঠিক করার জন্য ঘুরতে এসে আবার ভেগে যায় না। মরুভুমি যাত্রা কঠিন কাজ, এভাবে হয় না।

হঠাত এই বয়সে এসে একটা নেশা লাগলো। মানুষ চিনতে হবে। পরিচিত হতে হবে অনেকের সাথে। ৯৬ ৯৮ গ্রুপ আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে। প্রতিদিন কারো না কারো সাথে কথা হচ্ছে, অনেক কে ভুলে যাচ্ছি, আবার মনে পড়ে যাচ্ছে কোন বিশেষ ঘটনার কারণে। 

চমৎকার একটি সপ্তাহান্ত গেল। NDC reunion এবং KBS Unplugged, এই দু'টি অনুষ্ঠানে গেলাম এবং চেষ্টা না করেই অনেক মজা করলাম। অনেকের সাথে দেখা হল, নতুন করে পরিচয় হল। NDC band এর গান শুনতে শুনতে মৃত্যু চিন্তা গ্রাস করলো আমাকে। আমাদের কলেজ পাস এর ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ১৯টি ফানুস উড়িয়ে মাত্র স্টেজের কাছে ফিরে এলাম। মনে পড়লো, আমার সেঝ মামা আজ হতে ১৭ বছর আগে মারা গিয়েছিল। 

কোরবানীর ঈদ এর পরের দিন। মামি আর ২ বছর বয়সী শিশু পুত্র কে রেখে মামা আগে চলে যাচ্ছেন তার কর্মক্ষেত্র সউদি আরবে। মামি রা ৩ দিন পরে যাবেন, এই ৩ দিনে মামা ঘর বাড়ী গুছিয়ে রাখবেন। এয়ারপোর্ট এ যাওয়ার আগে আমার সাথে মামার শেষ কথোপকথন ছিল এরকম

"ভাইগ্না, আমার ছেলেটা তো বোকা হিসেবে বড় হচ্ছে। কি করা যায়?"
"মামা, চিন্তা কইরেন না, ছোটবেলায় যারা বোকা থাকে তারা বড় হতে হতে চালাক হয়ে যায়"
"বলছিস?" 
"হা মামা, আমাকেই দেখেন?" 
"আচ্ছা ঠিক আসে। তাও একটু তোর ছোট ভাইটার খোজ খবর নিস মাঝে মাঝে"। 
"অবশ্যই নিব"

এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে গাড়ী ছেড়ে যাওয়ার আগে নিজের কোল থেকে শিশু সন্তান কে আমার কাছে দিয়ে দিলেন মামা। ও সহজে আমার কোলে আসে না, কিন্ত ওইদিন কোন আপত্তি করলো না। 

মামার গাড়ি রিয়াদ এয়ারপোর্ট এর পার্কিং এ রাখা ছিল। উনি প্লেন থেকে নেমে গাড়ী নিয়ে বাসায় ফেরার পথে মারাত্নক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। উনার বয়স ছিল মাত্র ৩৯। দেশ থেকে মায়ের হাতে রান্না করা কোরবানীর মাংশ নিয়ে গিয়েছিলেন। 

আবার বলি, জীবন দুইদিনের। 

Wednesday, November 08, 2017

Stand With Riaz

"রিয়াজ এর জন্য ভালবাসা"


যখন ছোট ছিলাম, উঁচু দালানের দিকে তাকালে ভয় লাগতো। মনে হত, এত গুলো সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠবো কিভাবে?

আরেকটু বড় হলে ভয় পেতাম মোটা মোটা পাঠ্য বই। প্রত্যেক বছরের শুরুতে বইগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হত, এত কিছু কখন পড়বো?

বন্ধু দের সাথে একবার গিয়েছিলাম বান্দরবন। বগা লেক নামের একটা স্বর্গীয় জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা। ছোট একটা টিলায় হেঁটে উঠা লেগেছিল, তখনো সেখানে গাড়ি যাওয়ার রাস্তা হয়নি। লম্বা, খাঁড়া পথ বেয়ে উঠতে উঠতে মনে হয়েছিল মরেই যাব ক্লান্তিতে। মোটা, আনফিট শরীর নিয়েও উঠতে পেয়েছিলাম বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় এবং নিজ মনোবলে। প্রায় পড়েই যাচ্ছিলাম কয়েকবার, বন্ধুরা টেনে তুল্লো।

ইন্টারেস্টিং গল্পের বই ৬০০ পেজ হলেও পড়তে কষ্ট হয় না। সাথে বন্ধুরা থাকলে ১০ কিঃমিঃ পথ ও যেন ৫ মিনিটে শেষ হয়ে যায়। কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে ৩ তালা থেকে দৌড়ে ১৩ তালায় যাওয়া যায়, আবার ১৩ থেকে হেটে নামতাম গ্রাউন্ড ফ্লোরে। সবই ইচ্ছা শক্তি, মনের জোর আর স্বদিচ্ছার উপর নির্ভর করে।

প্রিয় লেখক পাওলো কোয়েলহো'র উপন্যাস এল্কেমিস্ট থেকে একটা লাইন ধার করিঃ

“And, when you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it.”

সহজ মানে হচ্ছে, যখন কেউ মন থেকে কিছু চায়, সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তাকে সাহায্য করে তা পেতে। আমরা সবাই চেয়েছি বন্ধু রিয়াজ কামাল সুস্থ্য হয়ে যাক, এবং এই চাওয়াটা কাজে রুপান্তরিত হতেও বেশি সমস্যা হবে না আশা করছি। 

প্রথমে মনে হল ৫০ লক্ষ টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। পরে জানতে পারলাম আমাদের দায়িত্ব ২৫ লক্ষ জোগাড় করা। অভি আরো সহজ করে দিল। ৭০০ সদস্য প্রত্যেকে ২০০০ করে দিয়ে ১৪ লক্ষ জোগাড় করলেই কাজ হবে। 

সাই ফাই গল্পের উপন্যাস পড়ার মত একেকটি পাতা উল্টাতে লাগলো দ্রুত। কিবরিয়া ও তরুর ব্যস্ততা কমেই না। এক বন্ধুর কাছ থেকে অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে না করতেও আরো ৫ জনের কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার হাজির। এ যেন এক মধুর সমস্যা। 

রিয়াজ, তোমাকে আমরা ভালবাসি, তোমার জন্য আমরা অনেক কেয়ার করি। কারণ তুমি তো আমাদেরই প্রতিবিম্ব। তোমার জীবন টা আমাদের যে কারো হতে পারতো, এবং আগামীতে আমাদেরো একই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে। আমরা চাই আল্লাহ তোমাকে দ্রুত সুস্থ্যতা দান করুক, আর তুমি আমাদের মাঝে ফিরে আস। আমিও চাই জীতুর মত তোমার মেয়ের বিয়েতে রোস্ট খেতে।  

বন্ধুত্ত আর প্রবল ইচ্ছাশক্তি যখন একত্রে কাজ করে, ঠেকায় কার সাধ্য? 

"If I fall along the way
Pick me up and dust me off
And if I get too tired to make it
Be my breath so I can walk

If I need some other love, then
Give me more than I can stand
And when my smile gets old and faded
Wait around I'll smile again

Shouldn't be so complicated
Just hold me and then
Oh, just hold me again"

Don't worry friend, we will hold your hand. We will make you stronger than ever. 

And we #Stand_With_Riaz
#ishtiaq_radical