Monday, January 04, 2021

Last Day of 2020

৩১ ডিসেম্বর, ২০২০। অভিশপ্ত বছরের শেষ দিনে একটি স্বস্তিদায়ক এসএমএস পেলামঃ

Date: 30.12.2020 ID: viro_96065 Patient's Name: Mohammad Ishtiaque Khan Age: 40 PCRCOVID-19 Result: Negative Samajik Durotto Bojay Rakhun Ebong Ghore Thakun বেশ কয়েকটি কারণে ব্যাপারটা ভাল লাগলো। নোয়াখালী থেকে ফেরার পরদিন থেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলাম। জ্বর খুব বেশি ছিল না, কিন্তু প্রতিদিনই আসতো, রাতের দিকে। সাথে অল্প স্বল্প কাশি। এর মাঝে একদিন সামান্য শ্বাসকষ্টের শিকার হয়েছিলাম। মাঝে কিছুদিন হাসপাতালে প্রচুর দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে, আর নোয়াখালীতে গিয়ে সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারটিও সেভাবে পালন করতে সমর্থ হইনি। শুভাকাঙ্খীদের সাথে আলাপ করে, এবং সব দিক বিবেচনা করে কোভিদ টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। দামী দামী জায়গায় টেস্ট করাতে পারতাম, কিন্তু ঠিক করলাম সরকারী ব্যবস্থাপনায়, BSMMU (সাবেক পিজি) হাসপাতাল থেকেই টেস্ট করাবো। অনলাইনে সিরিয়াল নিলাম। ২৯ তারিখ সকালে লগইন করে দেখলাম দিনে ৫টি স্লটে টেস্ট করানো হয়। আমি জায়গা পেলাম দুপুর ১২-১ টার স্লটে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রেজিস্টার করার প্রায় সাথে সাথেই স্লট নিশ্চিতকারক এসএমএস পেয়ে গেলাম। সরকারী জায়গায় যাচ্ছি; নিশ্চয়ই অনেক বিশৃঙ্খলা আর অনিয়ম থাকবে--এই চিন্তায় ভয়ে ভয়ে পরদিন উপস্থিত হলাম পিজি হাসপাতালের গেইটে। গেইট থেকে জানতে পারলাম যে করোনা টেস্ট করানোর জন্য আমাকে BSSMU Fever Clinic নামক স্থানে যেতে হবে, যা পিজি হাসপাতাল থেকে একটু দূরে, রাস্তার উল্টোপাশে অবস্থিত। অধুনা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (আগের শেরাটন) এর দুই বিল্ডিং পরেই সে স্থাপনা। গেটের মুখে একজন এসএমএস দেখতে চাইলেন। এসএমএস দেখানোর পর ভেতরে যাওয়ার অনুমতি পেলাম। ৩০ টাকা দিয়ে একটা ফর্ম পেলাম। সেখানে নাম ঠিকানা লিখে ভেতরে চলে গেলাম। এ যাবত দেখা হওয়া দু'জনের মানুষের গায়েই ফুল পিপিই ছিল, এবং তারা আমার সাথে যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। এরপর পূরণকৃত ফর্ম নিয়ে আরেকটু সামনে গিয়ে লাইনে দাড়ালাম। সেই লাইনেও খুব কম মানুষ ছিল; ১০-১২ জনের বেশি না। সবাই গ্যাপ দিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। অন্য একজন পিপিই পরিহিত ভদ্রলোক এসে ফর্মগুলো নিয়ে গেলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ডাক পেলাম ভেতরে যাবার জন্য। প্রথমে একজন ডাক্তার আমার সাথে কথা বললেন। যাবতীয় তথ্য জেনে নিলেন। কি কি লক্ষণ, কয়দিন ধরে জ্বর, কি কি রোগ আছে আমার, এবং আমি কি ঔষধ সেবন করি--তার সকল বৃত্তান্ত তিনি নোট করে রাখলেন। এরপর তিনি আমার প্রেশার ও অক্সিজেন মাপলেন, এবং সব শেষে উনার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার দিয়ে বললেন, যে আমার যদি কোভিদ পজিটিভ আসে, তাহলে উনারা আমার চিকিৎসার সকল দায়ভার বহন করবেন। উনাকে ফোন করে জানাতে হবে শুধু। আমি উনার চমৎকার ব্যবহার, এবং আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম। ক্ষনিকের জন্য ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে বসে আছি। সেখান থেকে বের হয়ে আরেকটি রুমে গেলাম। সেখানে আমার মোবাইলের মেসেজটি দেখে টাইমস্লট কনফার্ম করলেন এক ভদ্রলোক, এবং আরেকজন ১০০ টাকা ফিস সংগ্রহ করলেন। এরপর নমুনা দিয়ে বের হয়ে আসলাম। সাকূল্যে ৩০ মিনিট সময়ও লাগেনি পুরো ব্যাপারটিতে। ভীড় ছিল নিয়ন্ত্রিত। পরে জেনেছি, প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ কতজন টেস্ট করাতে পারবেন, সেটা অনলাইন পোর্টাল দ্বারা সুনিয়ন্ত্রিত। পুরো দালান প্রকোষ্ঠের কোথাও কোন অপ্রয়োজনীয় ভীড় দেখিনি। সবার মুখেই মাস্ক ছিল, এবং সকল কর্মীরা পিপিই ও মাস্ক পরিহিত ছিলেন। সর্বক্ষেত্রেই চমৎকার এবং নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এবং হ্যা, সব মিলিয়ে খরচ ঐ ১৩০ টাকাই, এবং শুরুতেই বলেছি, ২৪ ঘন্টার মাঝেই ফলাফল পেয়ে গিয়েছি। কিছুদিন আগেই আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ ৩,৫০০ টাকায় এভারকেয়ার (সাবেক এপোলো) হাসপাতাল থেকে একই টেস্ট করিয়েছেন। অন্যান্য বেসরকারী হাসপাতালগুলোতেও কোভিদ টেস্টের খরচ এরকমই। ২০২০ একটা বাজে বছর ছিল। কিন্তু বছরের শেষ ভাগে এসে সুন্দর সার্ভিসটি পেয়ে দেশকে নিয়ে আশাবাদী হয়েই ২০২১ সালে পদার্পণ করলাম। সবার নতুন বছর শুভ হোক। এই বছরে আর কোন দুঃসংবাদ শুনতে চাইনা। পুনশ্চঃ অনলাইন পোর্টালের লিংক
https://old.bsmmu.edu.bd/e_ticketing/f/fc_appointment

No comments: