Friday, June 26, 2020

কিভাবে মানসিক চাপ কমাবেন

মূল রচণাঃ Beyond Blue. (2008). Reducing Stress [fact sheet]. Retrieved from https://www.livingwell.org.au/wp-content/uploads/2012/11/Reducing%20Stress.pdf

অনুবাদঃ ইশতিয়াক খান

কিভাবে মানসিক চাপ কমাবেন

মানসিক চাপ এবং অবসাদ 

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সবার লক্ষ্য রাখতে হবে যে মানসিক চাপ এবং অবসাদ এক নয়। তবে অনেক দুঃখ কষ্টের সাথে কঠিন সময় যুক্ত হলে সেটা একজন মানুষকে অবসাদের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এরকম অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চললে অবসাদগ্রস্থ হবার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। 

মানসিক চাপের ব্যবস্থাপনা

কোন ঘটনা কিংবা পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে মানসিক চাপ আবির্ভুত হয়। এই চাপ ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক, দু'টিই হতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চাপের মুখে পড়া খুবই সাধারণ ঘটনা, এবং কাজ, পরিবার কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারনে এটি তৈরি হতে পারে। মানসিক চাপ তখনই আসে যখন এমন কোন কিছু ঘটে যা আমাদের দুঃচিন্তার কারণ ঘটায়, এবং সাথে আমাদের চিন্তা এবং অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। 


গত দুই সপ্তাহ ধরে আপনি কেমন বোধ করছেন এবং কি কি করেছেন, সেটা একটু ভাল করে ভাবুন। আপনি কিঃ

১। যখনই রিলাক্স করতে গিয়েছেন, তখনই ব্যাপারটাকে খুব কঠিন মনে হয়েছে? 
২। বেশিরভাগ সময়ই নিজেকে চাপের মুখে এবং কাজের মাঝে নিমজ্জিত অবস্থায় আবিষ্কার করেছেন? 
৩। সারাক্ষণ সন্ত্রস্ত থেকেছেন এবং নিজেকে দুঃচিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় অনুভব করেছেন?

এই তিনটি প্রশ্নের মাঝে এক বা একাধিকের উত্তর যদি "হ্যা" দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি মানসিক চাপে আছেন, এবং সেই চাপ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা শুরু করা উচিত এখনই। 

চাপ ব্যবস্থাপনা থেকে আমরা নিম্নলিখিত ব্যাপারগুলো শিখতে পারিঃ

১। চাপ এবং উদ্বেগের উপসর্গগুলো চিহ্নিত করতে পারা
২। চাপ এবং উদ্বেগ কমানোর জন্য কিছু নিঃস্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম (ব্রিদিং এক্সারসাইজ) 
৩। রিলাক্স করা এবং শারীরিক কার্যকলাপের উপকারিতা। 


চাপ কমানোর পন্থাসমূহ

কিছু সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে চাপ কমিয়ে আনতে পারি। 

১। জীবনের বড় কোন পরিবর্তন কে পিছিয়ে দিন

  • জীবনের যেকোন পর্যায়ে বড় কোন পরিবর্তন চাপের সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি চাপের মুখে থাকেন কিংবা কোন কিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, তাহলে বাসা বদলানো কিংবা চাকুরী পরিবর্তনের মত বড় ব্যপারগুলো থেকে আপাতত দূরে থাকাই শ্রেয়। আপনি আরও ভাল বোধ করতে থাকলেই কেবল এসবে হাত দিন।  

২। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব সমূহ দূরীভুত করুন

  • ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে পাওয়া মানসিক চাপ অনেকসময় বিষন্নতার জন্ম দেয়। একজন কাউন্সেলর কিংবা সাইকোলজিস্ট এর সাথে কথা বলুন যিনি আপনাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারবেন। 

৩। যেসব কাজ উপভোগ করেন, সেগুলোই করুন

  • আপনি হয়তো লক্ষ্য করবেন যে আপনি সময়টা কম উপভোগ করছেন আর বেশি দুঃচিন্তা করছেন। সুষ্ঠুভাবে রিলাক্স করার জন্য আপনাকে কিছু সময় আলাদা করে নিতে হবে উপভোগ্য কাজগুলো করার জন্য, যেমন ব্যায়াম করা, মেডিটেশান করা, বই পড়া, বাগান করা কিংবা গান শোনা। 

৪। আপনার কাজকে নিয়ন্ত্রণ করুন

  • আপনার কাজ কিংবা চাকুরীর উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করুন--অফিসে লম্বা সময় দেয়া এবং অতিরিক্ত দায়দায়িত্ব কাধে নেয়া থেকে বিরত থাকুন। বর্তমান সময়ে এটা ম্যানেজ করা খুবই কঠিন হতে পারে, কিন্তু ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কিছু পরিবর্তন জীবনে অনেক বড় পার্থক্য এনে দিতে পারে। 
  • মানুষকে বেশি বেশি করে "না" বলতে শিখুন। জীবিকা নির্বাহের কাজ এবং আপনি যেসব কাজ উপভোগ করেন, তার মাঝে স্থিতি আনুন। নিজেকে নতুন নতুন দায়বদ্ধতা দ্বারা পিষ্ট হতে দেবেন না। 
  • এটা নিশ্চিত করুন যে আপনার হাতে বিশ্রাম নেয়া, রিলাক্স করা এবং ব্যায়াম করার জন্য যথেষ্ট সময় থাকছে। 
  • কিভাবে রিলাক্স করা যায় তা শেখার অন্যতম বড় অংশ হচ্ছে নিজের উপভোগ্য কাজসমূহ সম্পাদনের জন্য দৈনিক কিছুটা সময় আলাদা করে রাখা।
৫। নিয়মিত ব্যায়াম করুন
  • হাঁটা, সাঁতার কাটা, নাচা, ফুটবল খেলা কিংবা জিমে যাওয়া আপনার পেশীর চাপ কে লাঘব করতে পারে, এবং আপনার মনকে রিলাক্স করতে সহায়তা করতে পারে। 
  • প্রতিদিনই কিছু পরিমাণে শরীরচর্চা করার চেষ্টা করুন। শুধুমাত্র হাঁটা হলেও। 
৬। সাহায্য নিন

আপনাকে সাহায্য করার জন্য কিংবা মানসিক চাপ লাঘব করার জন্য একজন বন্ধু, ডাক্তার, কাউন্সিলর কিংবা এমন একজন, যার উপর আপনার ভরসা রয়েছে, তার সাথে কথা বলতে পারেন। বাসায়, অফিসে কিংবা আপনার অন্যান্য নিয়মিত যাত্রার স্থানে সাহায্য ও সহযোগিতা চাইলে চাপ কমতে পারে। 


(লেখার পরবর্তী অংশে স্লো ব্রিদিং এক্সারসাইজ এর বিস্তারিত দেয়া আছে। সেটি উপরে সংযুক্ত ফাইল লিংক থেকে ডাউনলোড করে পড়া যাবে, এবং নির্দেশনাগুলোও সহজ ইংরেজীতে লেখা। তাই আর ঐ অংশটি এখানে যুক্ত করলাম না।) 

No comments: