বৈরুত এর এই স্মৃতিগুলো অনেক আগের, অনেক কিছুই আর সেভাবে মনে নেই। তবে বিশেষ কিছু দিন, কিছু ঘটনা, কিছু মানুষ আর কিছু জায়গা মনের মধ্যে দাগ কেটেছে। মূলত সে ঘটনাগুলোই বর্ণনা করার চেষ্টা করছি সেই প্রথম পর্ব থেকে।
আমার অফিসের জানালা দিয়ে দেখতে পেতাম American University of Beirut এর ক্যাম্পাস। এই অঞ্চলের অন্যতম বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সেটি, অনেক বিখ্যাত মানুষ সেখান থেকে পাশ করে বের হয়েছে। তবে বাইরে থেকে দেখে ক্যাম্পাসটি খুবই সাধারণ মনে হোত আমার কাছে।
সে যাই হোক। অফিসে প্রথম যেদিন প্রকৃতি আমাকে ডাক দিল, সেদিনের কথা স্পষ্ট মনে আছে। হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে গেলাম টয়লেট এর দিকে। জেন্টস টয়লেট বলতে যেটাকে চিনতাম, সেখানে গিয়ে হার্ড ব্রেক কষতে হল! দেখি টি শার্ট জিন্স পরিহিতা একজন সুবেশী ললনা দরজার বাইরে অপেক্ষ্মান। "ভুল পথে এলুম নাকি" ভাবতে ভাবতেই দেখি দরজা খুলে এক ভদ্রলোক(!) বের হলেন।
এবার ক্লিয়ার হল ব্যাপারটা। ইহা একটি উভয়লিঙ্গ প্রক্ষালন কেন্দ্র! কিছুক্ষন পর সেই ভদ্রমহিলা নিষ্ক্রান্ত হবার পর আমি এগিয়ে গেলাম দরজার দিকে, এবং পূর্ব অভিজ্ঞতাবশে লাইট এর সুইচ খুজতে লাগলাম।
আবারও অবাক হওয়ার পালা। বাইরে কোন সুইচ নেই। ভাবলাম, আচ্ছা, ভেতরে নিশ্চয়ই কিছু পাওয়া যাবে। নিশ্চিন্ত মনে ঢুকলাম ভেতরে, এবং স্বয়ংক্রিয় ভাবে লাইট জ্বলে উঠলো মাথার ওপর।
সেদিন রাতে হোটেলে ফিরে বাসায় ফোন দিলাম। আমার পিতা একজন স্থপতি; নানাবিধ নতুন টেকনোলজি নিয়ে উনার অনেক উৎসাহ।
বিপুল উতসাহের সাথে উনাকে বললামঃ
"আব্বা, তোমরা কি বাড়ী ডিজাইন করলা এতকাল। আজকে টয়লেটে ঢুকলাম আর সুইচ ছাড়াই লাইট সব জ্বলে উঠলো"
"ওহ, ওইটা মোশান সেন্সর অটো লাইট", খুব স্বাভাবিক ভাবে আব্বা উত্তর দিলেন।
"এহ! বল কি। এগুলা ঢাকায় পাওয়া যায়?"
"যাবে না কেন? নষ্ট হলে ঠিক করা ঝামেলা দেখে কেউ খুব একটা ব্যবহার করে না।"
"যাবে না কেন? নষ্ট হলে ঠিক করা ঝামেলা দেখে কেউ খুব একটা ব্যবহার করে না।"
ভেবেছিলাম বৈরুতের চমকপ্রদ গল্প বলে আব্বাকে চমকে দিব। সেই আশার বেলুনটি নিমেষে চুপসে গেল।
প্রতিদিন মোটামুটি সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত অফিস করতাম। আমার কলিগরা ৫ঃ৩০ থেকে ৬ টার মধ্যে বের হয়ে যেত। সন্ধ্যার পর আমার তেমন কিছু করার থাকতো না, তাই আমি অফিসেই বসে থাকতাম। এর মাঝে একদিন আবিষ্কার করলাম যে অফিসের কাছেই একটা সিনেমা হল আছে।
উইকেন্ডে সিনেমা দেখা যেন যথেষ্ঠ হল না। এক মংগল বারে অফিসের পর গেলাম সেই সিনেমা হল দেখতে। সে ছিল এক অনবদ্য অনুভূতি
(চলবে)
(চলবে)
আগের পর্বগুলিঃ
পর্ব ৪ঃ
https://www.facebook.com/groups/ssc96hsc98/permalink/2003300166589114/
পর্ব ৩ঃ
No comments:
Post a Comment